নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি ও সিটি মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে আমি যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু মেয়র হওয়ার কারণে আমি যেতে পারি নি । তাছাড়া এখানকার রাজনীতিতে যে বিভাজন আছে এ কারণে অনেক জায়গায় যেতে পারি না। একটা পক্ষ চায় না আমি সব জায়গায় যাই। তার কারণে নৌকার ভোটটাও চাইতে পারি নাই। তারপরও আমি প্রতিটি প্রার্থীর খোঁজ রেখেছি। আমাদের প্রর্থী নির্বাচিত হোক সেটাই চেয়েছি।”
শনিবার (১৩ জুলাই) বিকেলে নগরীর দুই নং রেল গেট এলাকায় আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় বক্তব্যকালে তিনি এসব কথা বলেন।
মেয়র বলেন,দলকে সবসময় ক্ষমতায় রাখতে হলে কাজ করতে হবে। বড় দল কিছু দ্বন্দ্ব থাকতেই পারে। সেসব উত্তরে উঠেই আমাদেরকে কাজ করতে হবে। কিছুতেই আমাদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করা যাবে না। সম্মেলন নিয়ে মারামারি কাটাকাটি করা যাবে না।” থানা ইউনিয়ন কমিটিতে ব্যালটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন করতে হবে।
তিনি বলেন, “আমি অনেকের জুনিয়ার, অনেকেই আমার বাবার সাথে রাজনীতি করেছেন। আবার কেউ কেউ এখানে আছেন আমার জুনিয়র। আমি রাজনীতিতে আসছি শেখার জন্য। আপনাদের কাছ থেকেই শিখছি। তাই আমার ভুল হতে পারে। রাজনীতিতে নতুনদেরকে আসতে দিতে হবে। পুরনোদেরকে অভিভাবকের দায়িত্ব নিতে হবে।”
‘সিটি করপোরেশন থেকে আওয়ামী লীগের জন্ম মিচ্যুয়াল ক্লাবকে সংরক্ষণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে’ জানিয়ে তিনি বলেন, “এই ক্লাবে আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছে। এই সভাটি হওয়ার কথা ছিলো চাষাড়া বায়তুল আমানে। কিন্তু ১৪৪ ধারা জারির কারণে সেখানে বঙ্গবন্ধুসহ অন্যরা বসতে পারেননি। এরপরই তারা চলে আসেন পাইকপাড়া মিচ্যুয়াল ক্লাবে। এখানে বৈঠক করেন। তারপর ঢাকার রোজ গার্ডেনে গিয়ে দলের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক ঠিক করা হয়। এসব কথা বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনীতে লেখা আছে।”
প্রথমবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ কাউকেই খুঁজে পাওয়া যায়নি মন্তব্য করে মেয়র আইভী বলেন, “তখন ছিলো জোট সরকার। ভয়াবহ একটা পরিস্থিতি। তখন অনেকেই ছিলেন না পাশে। কাউকে খুঁজে পাইনি। গুটি কয়েক আত্মীয় স্বজন, নেতা নিয়ে নির্বাচন করেছি। তখন দাঁড়ানোর মতো অবস্থা ছিল না। ঘরের থেকে লোক বের হতে চায়নি। আমি যখন মিশন পাড়া গিয়েছিলাম তখন আমার সাথে কেউ যেতে সাহস পায়নি। জোট সরকারের ভয়ে কেউ আসতে চায়নি। আমি মিশন পাড়া গিয়েছি। মানুষের ঘরে ঘরে গিয়েছি। বিএনপি আওয়ামী লীগ বুঝিনি। এখন সুসময় অনেকেই যুবলীগ ছাত্রলীগ বের হয়ে আসছে। তাদেরকে ভুলে গেলে চলবে না সেই ভয়াবহ দিনগুলোর কথা।”
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাইয়ের সভাপতিত্বে বর্ধিত এই সভার সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ মো. বাদল। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আরজু রহমান ভূইয়া, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, ইকবাল হোসেন চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক মীর সোহেল আলী, সোনারগাঁ উপজেলা চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন, বন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান এমএ রশিদ, ডা. আবু জাফর চৌধুরী বীরু প্রমূখ।